জেলেদের ১৬ টন চাল চেয়ারম্যানের পকেটে, আদালতে মামলা

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

জেলেদের বিতরণের জন্য দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া ১৬ টন চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আজ আদালতে মামলা হয়েছে।

অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের নাম জসীম উদ্দিন হায়দার। তিনি বাঁশখালী উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

রোববার (২৩ জুন) বাঁশখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হামিদের আদালতে চেয়ারম্যান জসীম হায়দার এবং তার ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শহিদুল ইসলাম সিকদারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার বাদীর নাম মীর মো. নজরুল ইসলাম। তিনি চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান সিআইপির ব্যক্তিগত সহকারী।

বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোশারফ হোসাইন খান বলেন, জেলেদের ১৬ টন চাল আত্মসাতের অভিযোগে খানখানাবাদের চেয়ারম্যান ও এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

আইনজীবী জানান, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইজিপিপি ও মানবিক সহায়তা কর্মসূচির অংশ হিসেবে খানখানাবাদ ইউনিয়নের নিবন্ধিত এক হাজার জেলে ও মৎসজীবীর জন্য প্রতিজন ৫৬ কেজি করে ৫৬ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেখান থেকে ১৬ টন চাল মামলার আসামিরা আত্মসাৎ করেছেন। এই অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪০৬/৫০৬/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১১ জুন রাতে বাঁশখালীর চাঁনপুরের আঞ্চলিক খাদ্যগুদাম থেকে নির্ধারিত ৫৬ টন চাল বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কৌশলে সেখান থেকে কিছু চাল অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়া হয়। এ খবর পৌঁছে বাঁশখালীর নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান সিআইপির কাছে। পরদিন (১২ জুন) সকালে এমপি মুজিবুর রহমান খানখানাবাদ ইউপি কার্যালয়ে চাল বিতরণ স্থলে সরেজমিন পরিদর্শনে যান। এসময় নিবন্ধিত জেলেরাও চাল নেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ানো ছিলেন।

এমপি চালের বস্তাগুলোতে কী পরিমাণ চাল আছে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন হায়দার জানান ৫৬ টন আছে। এমপি ১৬ টন চাল বিক্রি করার বিষয়টি উল্লেখ করেন। ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি অস্বীকার করেন। এরপর এমপি চেয়ারম্যানকে ‘চ্যালেঞ্জ’ করেন এবং তাৎক্ষণিক এক হাজার টাকা পারিশ্রমিকে দশজন শ্রমিক দিয়ে চালগুলো পরিমাপ করান। পরিমাপ করে ৫৬ টনের জায়গায় ৪০ টন চাল পাওয়া যায়।

এসময় ইউপি সচিব মো. জালাল মিয়া ৫৬ টন চালের চালান কপি না পাওয়ার বিষয়টি জানান। চাল আত্মসাতের বিষয়টি ধরা পড়লে উপস্থিত জেলে ও স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে পড়েন।

এমপি মুজিবুর রহমান চাল আত্মসাতকারীর বিরুদ্ধে মামলা করার আশ্বাস দিলে উত্তেজিত জনতা শান্ত হন।

চেয়ারম্যান কর্তৃক চাল আত্মসাতের বিষয়টি হাতেনাতে ধরা পড়ায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে নবনির্বাচিত এমপির তৎপরতাকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং দোষীদের শাস্তির দাবি করেছেন।

মন্তব্য করুন